বিজেপি সতী নারীদের ঘর ভাঙে : জনসভা মঞ্চ থেকে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ সুজাতার

11th January 2021 11:28 pm বর্ধমান
বিজেপি সতী নারীদের ঘর ভাঙে : জনসভা মঞ্চ থেকে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ সুজাতার


প্রদীপ চট্টোপাধ‍্যায় ( বর্ধমান ) :  সক্রিয় ভূমিকায় সোমবার পদ্ম শিবিরে অবতীর্ণ  হলেন শোভন ও বৈশাখী । আর সেই দিনই তাঁদের উদ্দেশ্য করে বেনোজির আক্রমন শানালেন সদ্য বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সুজাতা মণ্ডল খাঁ ।বিষ্ণুপুর লোকসভা অধীন পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের জনসভা অনুষ্ঠিত হয় । সেই সভায়  বক্তব্য রাখতে উঠে,“ বৈশাখী  ব্যানার্জীর নাম মুখে না এনে তাঁকে ‘অসতী নারী’ বলে  কটাক্ষ করেন সুজাতা খাঁ । একই সঙ্গে সুজাতা বলেন , বিজেপিতে  কোন সতী নারীদের জায়গা নেই ।  বিজেপি সতী নারীদের ঘর ভাঙে আর অসতীদের পুজো করে ।” সুজাতা খাঁ ও তার  বক্তব্যকে  যদিও কোন পাত্তাই  দিতে চান নি বৈশাখী ব্যানার্জী । পাল্টা প্রতিক্রিয় তিনি বলেছেন ,“ওর কথার কোন গুরুত্ব আমি দিতে চাই না । ওর কথা আমার কাছে যত কম বলবেন ততোই ভালো ।”  বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা খাঁ গত ২১ ডিসেম্বর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে কংগ্রেসে যোগদান করেন । যোগদানের পর 
এই প্রথম সুজাতা খাঁ তাঁর স্বামীর সাংসদ এলাকা বিষ্ণুপুরের খণ্ডঘোষ বিধানসভার জনসভায় যোগ দিলেন । ওই সভায় সুজাতা খাঁ ছাড়াও তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ ,দেবু টুডু ,মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ,প্রাক্তন সাংসদ মমতাজ সংঘমিতা,জেলা যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার সহ অন্য নেতা নেত্রী ও বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন ।  জনসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে সুজাতা খাঁ আরো বলেন , বিষ্ণুপুর লোকসভার মানুষ আমাকে রাজনীতির ময়দানে জায়গা  করে দিয়েছিল । সেই লোকসভা অধীন খণ্ডঘোষ 
বিধানসভায় এই প্রথম তিনি রাজনৈতিক কর্মসূচীতে যোগ দিলেন বলে দাবি করেন ।  তিনি বলেন ,বিজেপি দলটা , বর্বর ,অসভ্য , সাম্প্রদায়িক ও ভেকধারীদের দল । ওই দলে  মহিলাদের কোন সন্মান নেই । বিজেপি নেতারা মুখে যা বলে  কাজে তা করে না । বিজেপির লোকজন মুখে জয় ‘শ্রীরাম’ বলে ।  আমিও বলি ।রামচন্দ্রকে আমরা সবাই  ভক্তি করি । কোথাও লেখানেই  শ্রীরাম চন্দ্র শুধুমাত্র বিজেপির ভগবান  । সুজাতা খাঁ দাবি করেন , ভোটে জেতার জন্য বিজেপি শ্রীরামচন্দ্র কে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ করেছে। আর এইসব করে বিজেপি হিন্দু ও মুসলিমে লড়িয়ে দিচ্ছে । আবার জাতপাতের দোহাই দিয়ে হিন্দুতে হিন্দুতেও লড়িয়ে দিচ্ছে । সুজাতা এদিন দাবি করেন  ,১৯৮০ সাল থেকে শুরু করে এযাবৎ কালের নানা তথ্য ঘেঁটে তিনি জেনেছেন  বিজেপি ও আরএসএস  দলিত অর্থাৎ তপশিলি পরিবারের মানুষদের মর্যাদা দেয় না । ঘৃণা করে । ইংরেজরা ‘ডিভাইড এ্যন্ড রুল’ পলিশি নিয়ে দেশে অশান্তি  লাগিয়েছিল । তার মাশুল আজও দিতে হচ্ছে । বিজেপি এখন আবার সেটাই করছে ।  শুভেন্দু অধিকারীর নাম মুখে না এনে সুজাতা খাঁ বলেন , মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায় কাঁথির নেতা ও তার পরিবার এতদিন  সমস্ত ক্ষমতা ভোগ করেছেন।নিজেকে জননেতা বলে দাবিকরা কাঁথির নেতা ইডি, সিবি আইয়ের ভয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন । কেশপুর ও সবংয়ে ওনার জনসভায় লোক হয়নি । মমতা পচা মাল ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছেন  ,আর বিজেপির দিলীপ ঘোষরা সেটাই লুফে নিচ্ছে । কাঁথির নেতা তৃণমূলে থাকাকালে চোর ছিলেন । কিন্তু বিজেপির সাবান মেখে  সাধু হয়ে গিয়েছেন । এই প্রসঙ্গে কাটাক্ষের সুরে সুজাতা বলেন , তিনি অনেক বেইমান দেখেছেন ।  কিন্তু এতবড় মাপের  বেইমান দেখেন নি । আর চারমাস পর জননেতা চুপসে যাবে , ফুটে যাবে।  বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ ভিন রাজ্যের অন্যান বিজেপি নেতাদের অহরহ বাংলায় হাজির হওয়া নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি  সুজাতা  খাঁ ।  তিনি বলেন ,আগামী কয়েকটা মাস পশ্চিমবঙ্গ দেশের রাজধানী হয়েযেতে পারে । এমন হাবভাব করছে যেন এখনই ক্ষমতায় চলে এসেছে । সুজাতা দাবিকরেন ,বাংলায় এখন বর্গিরা আসছে ।অথচ কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের কৃষকরা কঠিন ঠান্ডার মধ্যে দিল্লিতে আন্দোলন চালিয়ে গেলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করার সময় নেই । শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিছনে লাগার জন্য বাংলায় আসছেন । ওরা ভিতু বলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম মুখে আনতে পারেনা । শুধু ভাইপো বলে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেয় । শাহস থাকলে অভিষেকের নাম মুখে এনে দেখাক ।   তাহলে বুঝবো ওরা বাপের ব্যাটা । বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে সুজাতা আরো বলেন, বাইরে থেকে উড়ে আসা বিজেপির পরিযায়ীরা নেতা মন্ত্রীরা আদানি, আম্বানিদের টাকায়  বাংলায় এসে পাঁচ তারা , সাত তারা হোটেলে ওঠেন। তার বিনিময়ে আদানি , আম্বানিরা কম সুদে ব্যাক ঋণ পায় । পরে সেই টাকা মেরে দিয়ে মেহুল চোকসি , বিজয় মালিয়ার মত ধনকুবেররা নিরাপদে বিদেশে পালিয়ে যায় । খণ্ডঘোষের জনসভা মঞ্চ থেকে সুজাতা  খাঁ সহ অন্য সকল তৃণমূল নেতারা এদিন দাবি করেন বিজেপি নেতারা বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখছেন দেখুন ।  তাতে  লাভ কিছু হবে না । বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তৃতীয় বারের জন্য মূখ্যমন্ত্রী করবেন । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।